মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ইত্যাদি ডিভাইস গুলো আমরা যখন চালাই তখন কি? একবার ভেবে দেখেছি এসকল ডিভাইস দির্ঘক্ষন ব্যাবহার করা আমাদের ক্ষতিকর কি না।
যে ভাইদের ফোনে গেম খেলা, মুভি দেখা, নেট ব্রাউজিং করা, ইত্যাদি কাজ করে থাকেন তাদের জন্য আজকের পোস্টটি। আগে প্রথমে জেনে নেই অতিরিক্ত মোবাইল, কম্পিউটারের মত ডিভাইস গুলো চালালে শরীরে কি কি সমস্যা হতে পারে
১) চোখের সমস্যা
২) মাথা ব্যাথা
৩) স্কিনের সমস্যা
৪) এলার্জির সমস্যা
৫) ঘুমের সমস্যা
আরও পড়ুন ,,,মোবাইলে ডাটা খরচ কমানোর উপায় কি?
১) চোখের সমস্যা
দির্ঘক্ষন ধরে মোবাইল বা কম্পিউটারের মত ডিভাইস গুলো চালাতে থাকলে চোখের মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। যেমনঃ চোখের দূর দৃষ্টির সমস্যা। অর্থাৎ দূরের কোন বস্তুকে দূর থেকে দেখতে সমস্যা হতে পারে। এজন্য পরবর্তীতে আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখে লেন্স বা চশমা লাগানো হতে পারে। চোখ দিয়ে যখন আমরা মোবাইলের ইস্কিনের দিকে এক নাগারে তাকাতে থাকি তখন ইস্কিনের আলো চোখে এসে পরে।
এই আলোতে কিছু ক্ষতিকর রশ্মি থাকে সেই রশ্মি গুলো আমাদের চোখের লেন্সের উপর প্রতিনিয়ত প্রতিসারিত হতে থাকে যার দরূন আমরা চোখের দৃষ্টি শক্তি ধিরে ধিরে হারাতে থাকি। আমরা যখন ডেস্কটপ বা কম্পিউটার চালাই তখন কিন্তু মোটামুটি একটু দূরে থেকেই চালাই কিন্তু যখন মোবাইল ফোন চালাই তখন কিন্ত কম্পিউটারের মত দূরে থেকে চালাতে পছন্দ করি না।
এজন্য যখন কম্পিউটার চালাবো তখন কমপক্ষে ২-৩ ফিট দূরে থেকে চালানোর অভ্যাস করবো। দূরে থেকে কম্পিউটার চালালে এর ক্ষতিকর রশ্মি আমাদের চোখে কম আঘাত করে। কিন্তু মোবাইল ফোন তো আমরা এতোটা দূরে থেকে চালাই না তাই মোবাইল ফোন থেকে ক্ষতিকর রশ্মি এসে আমাদের চোখের ক্ষতি করার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অনেকে বলে তাহলে কি তো মোবাইল ফোন ব্যাবহার করবো না। অবশ্যই ব্যাবহার করবেন কিন্তু এক নাগারে ২ ঘন্টার বেশি নয়।
সম্ভব হলে একটু দূরে থেকে চালাবেন। অনেক ফোনে আই প্রটেক্টর থাকে। এই ধরনের ফোনের আই প্রটেক্টর কতটা কাজ করে সেটা আমার জানা নেই, তবে ব্রান্ডের ফোন গুলোর আই প্রটেক্টরের ক্ষমতা মোটামুটি ভালো। আই প্রটেক্টর আপনার চোখে অতিরিক্ত ক্ষতিকর আলো আসতে বাধা দেবে।
আরও পড়ুন,,,, ফোন আসল নকল চেনার উপায়
২) মাথা ব্যাথা
আমরা অতিরিক্ত যখন মোবাইল চালাই তখন আমাদের মস্তিষ্ককে প্রেসার বা চাপ পরে এর ফলে মাথা ব্যাথা হতে পারে। চোখ আমাদের বিশেষ একটি সংবেদনশীল অঙ্গ। যা না থাকলে এই সুন্দর পৃথিবী দেখতে পেতাম না। আমরা যখন কিছু দেখি সেটা আমাদের মস্তিষ্ক কিছু সময়ের জন্য বা দির্ঘ সময়ের জন্য জমা রাখে। চোখে প্রচুর নিউরোন থাকে। যখন আমরা কোন বস্তুু বা প্রাণীকে দেখি তখন চোখের নিউরোন গুলো স্নায়ুর নিউরোন গুলোকে তাড়িত করে তখন মস্তিষ্ক সেই অনুসারে কাজ করে এবং বস্তুুটিকে দেখার জন্য চোখ আবার একটি বার্তা প্রেরন করে এবং তখনই আমরা বস্তুটিকে দেখতে পাই।
কিন্তু যখন আমরা মোবাইলে চালাই তখন এই কাজটা এক নাগারে হতেই থাকে এবং অনেকে একনাগাড়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে তখন তারা বাহিরের অন্য কোন বস্তুর দিকে তাকানোর সময় পায়না। এই অবস্থায় ক্ষকিকর রশ্মি গুলো তো প্রবেশ করতেই থাকে সেই সাথে চোখের ও মস্তিষ্কের মাঝে অনবরত কাজ হতেই থাকে যার ফলে এক সময় আমরা প্রচুর মাথা ব্যাথা অনুভব করি।
৩) স্কিনের সমস্যা
ত্বক আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় একটি অঙ্গ। এর মাধ্যমে আমাদের শরীরের ভিতরে অনেক অঙ্গানু রক্ষা পায়। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন চালাতে থাকলে ফোনের ক্ষকিকর রশ্মি গুলো আমাদের ত্বকেকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এবং ত্বকের জলীয় অংশ শুকিয়ে যায় ফলে ধিরে ধিরে মুখমন্ডল শুকিয়ে যায়।
তাছাড়া, যখন আমরা অত্যাধিক মোবাইল বা কম্পিউটারের চালানোর নেশায় যুক্ত হই তখন মস্তিষ্ক একনাগাড়ে একই ধরনের কাজ করতে থাকে। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এমনকি বাচ্চাটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধি হতে পারে। কারন, ক্ষতিকর রশ্মি শিশুদের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই কম বয়সি শিশুদের মোবাইল দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
আরও পড়ুন ,,,,,,মোবাইল ফোন গরম হওয়ার কারন কি?|চার্জে দিলে ফোন গরম হয় কেন
৪) এলার্জির সমস্যা
যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তারা অবশ্যই কোন না কোন একদিন চোখের চুলকানো অনুভব করেছিলেন। যাদের এলার্জি আছে তারা যখন দির্ঘ সময় মোবাইল ফোন চালায় তখন ক্ষতিকর রশ্মি চোখে প্রবেশ করতে থাকে যার ফলে এলার্জির মতো সমস্যা গুলো হতে পারে।
৫) ঘুমের সমস্যা
আমরা অতিরিক্ত যখন মোবাইল চালাই তখন আমাদের মস্তিষ্ককে প্রেসার বা চাপ পরে তখন আমাদের মাথা ব্যাথা হতে পারে। অতিরিক্ত মোবাইল চালাতে থাকলে মানসিক চাপ বা হাইপারটেনশন হতে পারে যার কারনে রাতে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। তাই রাতে কম পরিমানে মোবাইল ব্যাবহার করুন। রাতে ঘুমানোর আগে আপনার মোবাইল ফোনটি কয়েক ফিট দূরে রাখুন কারন মোবাইলের নেটওয়ার্ক থেকে সৃষ্ট উচ্চ ফ্রিকুয়েন্সি আপনার ঘুমের সমস্যা করতে পারে।
মোবাইল বা কম্পিউটারের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়।
১) অতিরিক্ত ২ ঘন্টার বেশি কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন চালানো যাবে না।
২) মোবাইলে অবশ্যই প্রটেক্টর লাগাতে হবে বা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখে চশমা ব্যাবহার
করে মোবাইল ফোন ব্যাবহার করা।
৩) ২-৩ ফিট দূরে থেকে কম্পিউটার চালানো।
৩) ঘুমের সময় মোবাইল বন্ধ করে ঘুমানো বা দূরে রেখে ঘুমাতে হবে।
৪) একনাগাড়ে বেশিক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে না থেকে বরং কিছু সময় জন্য অন্য কোন দূরের বস্তুর দিকে ৩০ সেকেন্ড মত তাকিয়ে থাকুন। এতে চোখ বিশ্রাম পাবে।
৫) ছোট বাচ্চাদের থেকে মোবাইল বা ডেস্কটপ দূরে রাখতে হবে।
৬) মাথা ব্যাথা করলে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল চালানো বন্ধ করতে হবে।
সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন আজকের পোস্ট এই পযন্ত।
ধন্যবাদ।
0 Comments