আমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহার করি তাদের একটি বিশেষ সমস্যা হলো কম্পিউটার স্লো হয়ে যাওয়া। কেউ কেউ আবার কম্পিউটার স্লো হওয়ার কারনে রিস্টার্ট দেয়। 

রিস্টার্ট দিয়ে সমস্যা সমাধান না হলে উইন্ডোজ দেয়। উইন্ডোজ দেয়ার পরে কিছুদিন হয়তো ভালোই চলে কিন্তু পরে আবার স্লো হয়। আসলে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বিভিন্ন কারনে স্লো কাজ করতে পারে। এখানে একটি কথা বলে রাখি সেটা হলো কোন রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।তাই এখানে আলোচনা করা হবে কি কি উপায়ে আপনাে কম্পিউটার স্লো হওয়া প্রতিরোধ করা যায়। যে বিষয় গুলোর কারনে কম্পিউটার স্লো হতে পারে। 

আরও পড়ুন ,,,,ফোন আসল নকল চেনার উপায়

১) কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে বা কম্পিউটারে কোন অপ্রত্যাশীত সফটওয়্যার রাখা দিলে। 

২) কম্পিউটারে আপডেট এন্টিভাইরাস না থাকলে

৩) ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেক গুলো এপ্স চলতে থাকলে। 

৪) প্রয়োজনের তুলনায় র্যাম কম থাকলে। 

৫) C  ড্রাইভে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে। 

৬) hard disk অনেক পুরাতন হলে। 

৭) নিয়মিত টাস্ক ক্লিয়ার না করলে। 

৮) আপডেট দেয়ার কারনে। 

আরও পড়ুন ,,,,নতুন পিসি|কম্পিউটার কেনার আগে যা জানা দরকার

১) কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে। 

 কম্পিউটারে কোন অপ্রত্যাশীত সফটওয়্যার বা ভাইরাস দ্বারা আক্রমণ ঘটলে কম্পিউটার স্লো হতে পারে। কম্পিউটার  ভাইরাস সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি জানি। আমরা যখন কোন মেমরি কার্ড বা অন্য কোন ডিভাইস আমাদের কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করি তখন কম্পিউটারের এন্টিভাইরাস দ্বরা সেগুলো স্কান করে তার ভিতরের ফোল্ডার গুলোতে প্রবেশ করি না।

 এর কারনে  কম্পিউটার ভাইরাস যখন কম্পিউটারে প্রবেশ করে তখন প্রথমে আমাদের কম্পিউটারের প্রয়োজনীয় প্রগ্রাম গুলোকে ধিরে ধিরে আক্রমন করতে থাকে। যখন প্রগ্রামগুলোকে আক্রমন করতে থাকে  তখন কম্পিউটার ধিরে ধিরে স্লো হতে থাকে এবং যখন সম্পূর্ণভাবে আক্রমন করে তখন কম্পিউটার কাজ করা বন্ধ করে দেয় বা হ্যাং করে অথবা কম্পিউটার বার বার রিস্টার্ট হতে থাকে।

আরও পড়ুন ,,,,মোবাইলে ডাটা খরচ কমানোর উপায় কি?

 এক্ষেত্রে আপনার কম্পিউটারে যদি ভালো একটা এন্টিভাইরাস থাকে তাহলে স্কান করলে চিহ্নিত করতে পারবেন এবং হয়তো সেটা রিমুভ করতে পারবেন। আর সবসময় সর্তক হতে হবে। যেকোন ডিভাইস কম্পিউটারে প্রবেশের পরে স্কান করে সেই মেমরি বা ডিভাইসটিতে প্রবেশ করতে হবে। 

২) কম্পিউটারে আপডেট এন্টিভাইরাস না থাকলে

কম্পিউটারে আপডেট এন্টিভাইরাস না রাখলে কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করলে যেকোন সময় আপনার কম্পিউটারে ক্ষতিকর প্রগ্রাম প্রবেশ করতে পারে।

 তাই আপডেট এন্টিভাইরাস ব্যাবহার করুন দেখবেন আপনার কম্পিউটার অনেক ভালো থাকবে। ইউন্ডজ ১০ ব্যাবহার করতে পারেন এটাতে বিল্ট-ইন এন্টিভাইরাস আছে। শুধু মাঝে মাঝে আপডেট দিবেন। 

আরও পড়ুন ,,,,, কোন উইন্ডোজ ব্যাবহার করা ভালো হবে?

৩) ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেক গুলো এপ্স চলতে থাকলে

ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেকগুলো এপ্লিকেশন একসাথে  চলতে থাকলে কম্পিউটারের প্রসেসর এবং হার্ডিস্কের উপর প্রেসার পরতে থাকে এজন্য কম্পিউটার কাজ করার সময় স্লো কাজ করে বা হ্যাং করতে থাকে। তাছাড়া ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেকগুলো এপ্লিকেশন এভাবে চলতে থাকলে র্যাম(Ram) এর স্পেস কমতে থাকে।

 তাই পর্যাপ্ত Ram না থাকার কারনে কম্পিউটারে অন্য সকল প্রয়োজনীয় এপ্লিকেশন গুলো চালাতে সমস্যা হয়। 

ধরুন, আপনার কম্পিউটারে একটি 4GB Ram লাগানো আছে। এখন, কম্পিউটারে ২-৪ টি ভারি সফটওয়্যার ইনস্টল করার পরে দেখলেন র্যামের স্পেস অনেক কমে এসেছে।

 এখানে যদি আরও সফটওয়্যার ইনস্টল করতে চান তাহলে আরও র্যাম কমতে থাকবে। এক সময় কম্পিউটার তার প্রগ্রাম চালানোর জন্য পর্যাপ্ত র্যাম না পাওয়ার ফলে কম্পিউটার স্লো কাজ করতে থাকে।

আরও পড়ুন ,,,,মোবাইলে থেকে কম্পিউটার ইন্টারনেট ব্যবহার এর উপায়

৫) C  ড্রাইভে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে। 

কম্পিউটারে যে ড্রাইভে আমরা উইন্ডোজ ইনস্টল করি সেই ড্রাইভে যদি পর্যাপ্ত স্পেস না থাকে তাহলে কম্পিউটার তার প্রগ্রাম গুলো সটিকভাবে  চালাতে পারে না। ফলে কম্পিউটার স্লো কাজ করতে থাকে। মিনিমাম মোট ড্রাইভের ১৫% খালি রাখার চেষ্টা করতে হবে। 

৬) hard disk অনেক পুরাতন হলে।

Hard disk অনেক পুরাতন হলে এবং সেই hard disk এ উইন্ডোজ ইন্সটল করলে কম্পিউটারে স্লো কাজ করতে থাকে। এক্ষেত্রে নিচের ট্রিক গুলো পুরাতন এবং নতুন হার্ডিস্ক ব্যাবহারকারীদের কাজে আসতে পারে। 

# hard disk ডিফ্রাগমেন্ট করতে হবে। 

# মাঝে মাঝে C drive সহ সবগুলো ড্রাইভ ক্লিন করে নিবেন। 

# মাসে অন্তত ১ বার ডিস্ক চেক করতে হবে। 

# ঘনঘন উইন্ডোজ দেয়া থেকে বিরত থাকুন। 

৭) নিয়মিত টাস্ক ক্লিয়ার না করলে। 

নিয়মিত কম্পিউটারের টাস্ক ক্লিন না করলে বা Recycle bin এ অনেকগুলো ফাইল বা ফোল্ডার জমা হয়ে থাকলে স্লো কাজ করতে থাকে। keypad এর windows button + R টাইপ করলে 

Run অপশনটি আসাবে। এবার সেখানে %temp%

টাইপ করলে কিছু টাস্ক আসবে সেগুলো সব ডিলেট করে দিন।

যদি উইন্ডোজ পারমিশন চায় তাহলে continue করে ডিলেট করে দিন। 

এটা হয়ে গেলে Run এ আবার আবার টাইপ করুন temp এবারো পূবের মতো কিছু টাস্ক আসবে সেগুলো ডিলেট করে দিন। আবার Run এ টাইপ করুন recent এবারো পূবের মতো টাস্ক গুলো ডিলেট করে নিন। 

আরও পড়ুন ,,,কম্পিউটারের কমন সমস্যা এবং তার সমাধান

৮) আপডেট দেয়ার কারনে। 

অনেক সময় কম্পিউটার স্লো হওয়ার কারন হতে পারে উইন্ডোজ আপডেট দেয়া। কারন আপনার কম্পিউটার যদি অনেক পুরাতন হয় বা র্যাম কম হয় বা প্রসেসর কম হয়ে থাকে তাহলে সমস্যা হবে আপডেট দিলে।

 কারন মাইক্রোসফট কোম্পানি প্রতিনিয়ত তাদের ফিচার আপডেট করছে সে কারনে নতুন ফিচার বা নতুন ভার্সনের এই আপডেট আপনার লো কনফিগারেশন পিসিতে কম্ফিটেবল নাও হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে পিসি স্লো কাজ করতে পারে।

তাই,, প্রয়োজনে আপডেট বন্ধ রাখুন কিন্তু সিকিউরিটি আপডেট মাঝে মাঝে চেক করে আপডেট দিয়ে নেবেন।

উপরে বিষয় গুলো খেয়াল রাখলে আশা করা যায় কম্পিউটার স্লো কাজ করবে না। 

ধন্যবাদ